
ডেঙ্গুর হটস্পট বরগুনা; প্রকোপ ছড়াচ্ছে উপজেলাজুড়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক
ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত বরগুনায় এবার পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। জেলা সদরের পাশাপাশি উপজেলাগুলোতেও দ্রুত বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। স্থানীয়রা বলছেন, মশা নিধন কার্যক্রমে প্রশাসনের উদাসীনতা ও দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার কারণেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
বরগুনা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত শুধু পাথরঘাটা উপজেলাতেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৬৮ জন। সরকারি পরিসংখ্যানে মৃতের সংখ্যা দুইজন হলেও অনানুষ্ঠানিক তথ্যে এই সংখ্যা আরও বেশি, যা স্থানীয়ভাবে ৯ জন বলে দাবি করা হচ্ছে।
চিকিৎসাসেবার সীমাবদ্ধতা বাড়িয়ে দিয়েছে রোগীদের দুর্ভোগ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স, ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ না থাকায় রোগীদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। এতে বাড়ছে চিকিৎসা ব্যয় ও সময়ের অপচয়— যা গুরুতর রোগীদের জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
একজন রোগীর স্বজন জানান— “হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। বাইরে টাকা দিয়ে সব করতে হয়। ওষুধও আমরা নিজেরাই কিনে আনি।”
এদিকে মশা নিধন কার্যক্রম নিয়ে তীব্র ক্ষোভ স্থানীয়দের। তাদের অভিযোগ— কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ।
সচেতন নাগরিকদের একজন বলেন— “প্রশাসনিক তৎপরতা থাকলে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হতো না। অনেক মানুষ সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন।”
আরেকজনের মতে— “জনপ্রতিনিধিদের সমন্বিত ও আন্তরিকভাবে কাজ করলে আজ আমাদের এ অবস্থা হতো না। উন্নয়ন ও স্বাস্থ্যসেবায় উদাসীনতাই ডেঙ্গুর ভয়াবহতার কারণ।”
সরকারি উদ্যোগ থাকলেও মাঠ পর্যায়ে তা বাস্তবায়নে দুর্বলতার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বরগুনার সার্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা আরও ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে।