
স্টাফ রিপোর্টার | দৈনিক শেষ কথা
বরগুনার পাথরঘাটায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাদী নাসরিনকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শরিয়ত উল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।
জমিজমা বিরোধ থেকে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা
ঘটনা শুরু হয় চলতি বছরের ২ জুলাই। ওইদিন বাদী নাসরিন দ্রুতবিচার আইনে প্রতিপক্ষ হালিমসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ট্রাকপ্রতি এক হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ এনে মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাথরঘাটা থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. রিমন তদন্ত শেষে অভিযোগকে “সত্য” বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
চার্জ শুনানিতে বেরিয়ে আসে সত্য
চার্জ শুনানির সময় আদালত লক্ষ্য করেন—
বাদী ও আসামি হালিমের মধ্যে পূর্ব থেকেই জমিজমা বিরোধ চলছে;
এ বিরোধ দেওয়ানি আদালতে বিচারাধীন;
জমি নিয়ে স্ট্যাটাস কো আদেশ বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও বাদী নাসরিন সেখানে ঘর তোলার চেষ্টা করেন;
এর জের ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়।
কিন্তু বাদী এই দেওয়ানি বিরোধকে “চাঁদাবাজি” মামলায় রূপ দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন এবং আদালতে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন।
উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ: আদালতের পর্যবেক্ষণ
রায়ে আদালত বলেন,
“বাদী প্রতিপক্ষকে হয়রানি করতে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা মামলা করেছেন, যা আদালতের প্রক্রিয়ার অপব্যবহারের শামিল।”
ফলস্বরূপ, নাসরিনকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে শোকজ
তদন্তকারীর ভূমিকা নিয়েও কঠোর অবস্থান নেয় আদালত।
যাচাই-বাছাই ছাড়া অভিযোগকে “সত্য” উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করার কারণে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. রিমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শাতে (শোকজ) বলা হয়েছে।
পাশাপাশি তার তদন্তাধীন সব মামলা অন্য কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে আলোচনা
মিথ্যা মামলার এমন বিচার স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আইনজীবী মহলে মতামত এসেছে।
প্রতিবেদন: দৈনিক শেষ কথা