
বরগুনা প্রতিনিধি:
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পরপরই বরগুনা শহরে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। সন্ধ্যায় আল মিজান শপিং কমপ্লেক্সের সামনে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, ছাত্রশক্তি ও সাধারণ মানুষ মিলে মিষ্টি বিতরণ করে আনন্দ প্রকাশ করেন। ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)–এর স্থানীয় নেতাকর্মীরাও এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
মিষ্টি বিতরণে অংশ নেওয়া পথচারী হাসান মাহমুদ বলেন, “আমি দুটি মিষ্টি খেয়েছি। কত খুশি হলে মানুষ দুটি মিষ্টি খায়! ৫ আগস্টের পর হাসিনা দৌড়ানি খেয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অসংখ্য মানুষকে হত্যার দায় থেকে সে বাঁচতে পারে না। আজকের ফাঁসির রায় আমাদের বহুদিনের অপেক্ষার অবসান।”
রায়ে বলা হয়, পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে এক নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি পূর্ণাঙ্গভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি তিনটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাংলাদেশে থাকা সব সম্পদ জব্দের নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী মীর নিলয় বলেন,
“২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার ন্যায্য আন্দোলনে গুলিবর্ষণ ও হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল হাসিনা। এমনকি আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ পর্যন্ত বলা হয়েছিল। আজকের রায়ে তার সেই দুঃশাসনের বিচার হয়েছে।”
আরেক সমন্বয়কারী রেজাউল করিম বলেন,
“এই রায় ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত। আর কোনো সরকার যেন জনগণের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী আচরণ করতে সাহস না পায়।”
রায় ঘোষণার পর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বরগুনা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট আনন্দ মিছিল, স্লোগান এবং স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশ দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান, এই রায় দেশের সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশাকে পূর্ণ করেছে