
স্টাফ রিপোর্টার | দৈনিক শেষকথা
বরগুনা: সরকারি অনুমোদন ব্যতীত হাতুড়ে বা ভুয়া প্রাণী চিকিৎসকদের অপচিকিৎসায় বরগুনাজুড়ে প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য গবাদি পশু। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জেলার হাজারো খামারি ও প্রান্তিক পশুপালক।
বরগুনা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে—
আমতলী উপজেলায় ৭৩ জন
তালতলীতে ৪৩ জন
বরগুনা সদরে ৪৯ জন
বেতাগীতে ১৭ জন
বামনায় ১২ জন
পাথরঘাটায় ৩২ জন
মোট ২২৬ জন নিবন্ধনবিহীন ও অদক্ষ ব্যক্তি প্রাণী চিকিৎসার নামে প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
বরগুনায় বিপুল গবাদি পশু জনসংখ্যা
জেলায় নিবন্ধিত গবাদি পশুর সংখ্যা—
প্রাণী সংখ্যা-
গরু ৪৫৪,৩৭৯
মহিষ ২৮,৮০৮
ছাগল ১,৮০০৩৪
ভেড়া ৮,১৯৯
ঘোড়া ১০৪
সর্বমোট ৬৬৮,৭৫৮
এছাড়াও জেলায় রয়েছে—
গবাদি পশুর খামার: ১,৫৭৮
প্রান্তিক পশুখামারি: ৮০,৬০৮
পোল্ট্রি খামার: ২,৩১৪
হাঁসের ফার্ম: ৭৫
প্রান্তিক হাঁস খামারি: ৪৬,০৬৪
মোট প্রাণিসম্পদ পরিবার: ১,৪২,১০৩
এত বড় খাত গড়ে উঠলেও অদক্ষ চিকিৎসার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খামারিরা।
খামারিদের অভিযোগ
বরগুনার বিভিন্ন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়—
ভুয়া চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় পশুর মৃত্যু, রোগ জটিলতা বৃদ্ধি, প্রজনন সমস্যা ও আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
নিবন্ধন ও সনদ ব্যতীত ভেটেরিনারি চিকিৎসা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
📌 দণ্ড: সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ড।
প্রশাসনের অবস্থান
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান দৈনিক শেষকথাকে বলেন—“অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। নিবন্ধন ও সনদ ব্যতীত চিকিৎসা করার সুযোগ নেই। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
সচেতনতা ও নজরদারি প্রয়োজন
প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন—
গ্রামের মানুষ এখনও প্রচলিত ভুয়া চিকিৎসকদের ওপর নির্ভরশীল। দ্রুত সরকারি নজরদারি, ব্যাপক প্রচারণা এবং খামারিদের সচেতনতা বৃদ্ধি না করলে বরগুনার সম্ভাবনাময় প্রাণিসম্পদ খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।