
📰 বরগুনা: ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে এক কলেজ শিক্ষার্থীর অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে বরগুনা সদর উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয়ের (এলজিইডি) এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে গ্রেফতার করেছে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
মোঃ সামিউল আলিম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (BDIRWSP), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়, বরগুনা সদর, বরগুনা-য় কর্মরত বর্তমানে।
গ্রেফতারকৃত উপ-সহকারী প্রকৌশলীর নাম সামিউল আলীম (২২)। তিনি ঢাকার সাভার থানার বজলুর রহমানের ছেলে এবং বরগুনা সদর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। বুধবার সন্ধ্যায় বরগুনা সদর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলা সূত্রে বিস্তারিত
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষার্থীর সঙ্গে ২০২৩ সালে ফেসবুকে সামিউল আলিমের পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সূত্র ধরে নিয়মিত মোবাইল ফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে তারা নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে কথা বলতেন।
তরুণীর অভিযোগ, ভিডিও কলে কথা বলার সময় সামিউল আলিম বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে ও ভুল বুঝিয়ে তাকে অর্ধনগ্ন হতে বাধ্য করেন।
ব্ল্যাকমেইল ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ
প্রেমের সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর তরুণী জানতে পারেন সামিউলের একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এবং তার স্বভাব-চরিত্র ভালো নয়। এতে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
ক্ষিপ্ত হয়ে সামিউল আলিম কৌশলে মোবাইল ফোনে ধারণ করা ওই তরুণীর যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিওর ভয় দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করেন। তিনি তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য চাপ দেন এবং ব্যর্থ হলে নগদ আট লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
অভিযোগ রয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর সামিউল আলিম তার হুমকি অনুযায়ী বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে তরুণীর অর্ধনগ্ন ভিডিও শেয়ার করেন। এমনকি, ভুক্তভোগীর ছোটবোনের মেসেঞ্জারেও লিঙ্ক পাঠিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী তরুণী আরও দাবি করেন, সামিউল আলিম ভিডিও কলের সুযোগ নিয়ে চাপ প্রয়োগ করে তার অর্ধনগ্ন ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। এসব ভিডিও দিয়ে পর্নোগ্রাফি তৈরি করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তিনি ফেসবুক ও মেসেঞ্জার গ্রুপে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এতে তার ব্যক্তিগত ও সামাজিক মর্যাদাহানি হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, “গ্রেফতারকৃত আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”